স্থিতিবিদ্যার পরিচয়

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - উচ্চতর গণিত - উচ্চতর গণিত – ২য় পত্র | | NCTB BOOK
2

স্থিতিবিদ্যা (Statics) হল একটি শাখা যা মূলত বস্তুগুলোর অবস্থানগত বিশ্লেষণ করে এবং সেই বস্তুতে প্রযোজ্য বল ও শক্তির সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে, যেখানে বস্তুটি গতিহীন থাকে বা তার গতির গতি শূন্য থাকে। এই শাখাটি মূলত শক্তি ও বলের কর্ম এবং তাদের সমীকরণ সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে।

স্থিতিবিদ্যার মধ্যে প্রধানভাবে ভারসাম্য (Equilibrium) এর ধারণা থাকে, যা বোঝায় যে, কোনো বস্তু যদি স্থির অবস্থায় থাকে, তাহলে তার উপর প্রযোজ্য বলগুলো এমনভাবে সমন্বিত হতে হবে যেন তার ওপর কোনো নিঃশেষিত শক্তির প্রভাব না থাকে।

মূল ধারণাগুলো:

  1. বল (Force): বল হলো একটি শারীরিক প্রভাব যা কোনো বস্তুতে গতির পরিবর্তন ঘটায় বা তার অবস্থান পরিবর্তন করতে সাহায্য করে। বলের গতি, দিক ও আকার বস্তুটির অবস্থান ও অবস্থার উপর প্রভাব ফেলে।
  2. ভারসাম্য (Equilibrium): ভারসাম্য অবস্থা তখন সৃষ্টি হয় যখন বস্তুতে প্রযোজ্য সকল বাহুবল একে অপরকে পরিপূরকভাবে ব্যালেন্স করে রাখে, অর্থাৎ বলের যোগফল শূন্য থাকে।
  3. টর্ক (Torque): টর্ক হলো এক ধরনের বল যা কোনো বস্তু বা বাহুর ঘূর্ণন সৃষ্টি করে। এটি পিভট বা ঘূর্ণন বিন্দুর উপর নির্ভর করে।
  4. লিভার (Lever): লিভার হলো একটি যান্ত্রিক যন্ত্র যা শক্তি বা বলের বাহুবল ব্যবহার করে কাজ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। লিভার তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত: প্রথম শ্রেণী, দ্বিতীয় শ্রেণী, এবং তৃতীয় শ্রেণী।
  5. গোলোক (Couple): গোলোক হলো দুটি সমান এবং বিপরীতমুখী বলের একটি ব্যবস্থা, যা একে অপরকে ঘূর্ণন বা টর্ক তৈরি করতে সহায়তা করে।
  6. পিভট (Pivot): পিভট হলো একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট যেখানে কোনো বস্তু বা বাহু ঘূর্ণন করে।

স্থিতিবিদ্যা প্রকৌশল, গঠন এবং মেকানিক্যাল ডিজাইনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের বল, লিভার, টর্ক এবং গোলোকের মধ্যকার সম্পর্ক বোঝা অত্যন্ত জরুরি।

এই শাখাটি বাস্তব জীবনে বিভিন্ন যন্ত্র যেমন গাড়ির চাকা, সেতু, কাঁধের উপকরণ ইত্যাদি বিশ্লেষণ করার জন্য ব্যবহার হয়।

Promotion